কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের দুই রোহিঙ্গা নারী বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করতে এসেছিলেন শহরের আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন, দুজনই মিয়ানমারের নাগরিক। এরপর দুজনকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।
গতকাল সোমবার বিকেলে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে দুই রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে দুই রোহিঙ্গাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে আজ কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
দুই রোহিঙ্গা নারী উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৪) সি ব্লকের বাসিন্দা। এর মধ্যে একজন ১৬ বছরের কিশোরী। অপরজন কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা আয়ুব খানের মেয়ে মারজানা বিবি প্রকাশ মরিয়াম বিবি (২২)।
এ সময় তাঁদের দুজনের কাছে পাসপোর্টের আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া বিভিন্ন কাগজপত্র, তিনটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), কক্সবাজার পৌরসভার জাতীয়তা সনদপত্র, কক্সবাজার পৌরসভার প্রত্যয়নপত্র, পৌর করের বিল, জমির খতিয়ান, জাতিসংঘের ইউএনএইচআর প্রদত্ত মিয়ানমারের নাগরিকদের দেওয়া দুটি স্মার্টকার্ড উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান প্রথম আলোকে বলেন, দালালের মাধ্যমে এই দুই রোহিঙ্গা নারী বাংলাদেশি সেজে পাসপোর্ট তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এর পেছনে কারা জড়িত, পাসপোর্ট তৈরির কাগজপত্র কারা জোগাড় করে দিলেন, কী উদ্দেশ্যে পাসপোর্ট তৈরি হচ্ছিল, তার অনুসন্ধান করা হচ্ছে। জড়িত ব্যক্তিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার দুই রোহিঙ্গা তরুণীকে আজ দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে দুই রোহিঙ্গা তরুণীকে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।
ওসি বলেন, গ্রেপ্তার দুই রোহিঙ্গা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তাঁরা মিয়ানমারের নাগরিক, দালালের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে তাঁরা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন।
কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. মোবারক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশি এনআইডি কার্ড নিয়ে রোহিঙ্গারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন নিয়ে আসেন। কাগজপত্র যাচাই–বাছাইকালে রোহিঙ্গা প্রমাণিত হওয়ার আগে তাঁরা সরে পড়েন। পাসপোর্ট কার্যালয়টি দালালমুক্ত ঘোষণা দিয়ে ফটকে একাধিক ব্যানার টাঙানো আছে।
পাঠকের মতামত: